১-“সাংবাদিকতার আড়ালে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে অনিমার সক্রিয় ভূমিকা”
২- সাভারে সাংবাদিকতার আড়ালে রাজনীতির খেলা – সাংবাদিক অনিমার বিতর্কিত কর্মকাণ্ড
খবরপাতা, নিজস্ব প্রতিবেদক।
সাভারে সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন সাংবাদিক অনিমা। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তার ভূমিকাকে নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষ অভিযোগ করছেন, তিনি এখনো আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন এবং বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
সাভারের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাংবাদিক অনিমার সাম্প্রতিক কার্যক্রমে অর্থায়ন করছে আওয়ামী লীগের সাভার উপজেলার কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। ফলে তিনি সাংবাদিকতার নামে অপকর্ম করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। নারী সংবাদকর্মী পরিচয় ব্যবহার করে তিনি অনেক সময় সহকর্মী গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে অযাচিত সহানুভূতিও নিচ্ছেন।
তবে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও রয়েছে নানান ধোঁয়াশা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাভার ডগরমোড়া এলাকার সেনেটারী মিস্ত্রি সুজা মিয়ার স্ত্রী ছিলেন অনিমা। এ সংসারে তার দুটি সন্তান রয়েছে—অন্তর (৩০) ও অনিক (২৬)। তবে বর্তমানে তিনি ওই স্বামীর সাথে বসবাস করছেন না। সংসার চলাকালীন সময়েই তিনি পুরান ঢাকার একজন ব্যবসায়ীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেলের মাধ্যমে তাকে বিয়ে করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী অনিমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। একইসাথে স্বামী সুজা উদ্দিনও বিভিন্ন জায়গায় অনিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সে সময়ের ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেওয়া হয়।
এমনকি ওই সময়ে দৈনিক গণতন্ত্রসহ একাধিক জাতীয় পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এসব প্রকাশনার পর সাংবাদিক অনিমা গণতন্ত্র পত্রিকার সম্পাদক বরাবর উকিল নোটিশ পাঠান। এসব ঘটনায় তার ব্যক্তিগত জীবন ও সাংবাদিকতার সততা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
তার বড় ছেলে অন্তরকে নিয়েও স্থানীয় মানুষের অভিযোগ কম নয়। অন্তর দীর্ঘদিন ধরে সাভার পৌর এলাকার ডগরমোড়া মাতৃবান মসজিদের পাশের বড় মাঠ এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে চলাফেরা করতেন। এলাকার মানুষ জানান, অন্তর ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন এবং প্রতিবারই মায়ের সাংবাদিক পরিচয় ও রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে রক্ষা পেতেন। স্থানীয়রা ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতেন না। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পরিস্থিতি বদলে যায়। বর্তমানে অন্তর পলাতক বলে জানা গেছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা অভিযোগ করেন, অনিমা এখনো আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে সাংবাদিকতার নামে অপকর্ম চালাচ্ছেন। বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচার করে তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছেন।
গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট অনেকে মনে করেন, সাংবাদিকতা একটি পবিত্র পেশা। এখানে ব্যক্তি স্বার্থ, দলীয় রাজনীতি বা প্রভাব খাটানোর কোনো সুযোগ নেই। একজন সাংবাদিক যদি নিরপেক্ষতা হারান, তবে তার প্রতিটি প্রতিবেদন জনমনে সন্দেহ তৈরি করে। সাভারের মানুষ এখন অনিমার কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে—তিনি আসলেই সাংবাদিক, নাকি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের একটি হাতিয়ার?
সব মিলিয়ে সাভারে সাংবাদিক অনিমার অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ড এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের আড়ালে সাংবাদিকতার অপব্যবহার শুধু পেশাটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং সাধারণ মানুষের আস্থাকেও ভেঙে দিচ্ছে।